কুড়িগ্রামে হ্যান্ড মাইক নিয়ে পায়ে হেঁটে ভোট চাইছেন এমপি পদপ্রার্থী আব্দুল হাই মাস্টার

মোঃ ফিরোজ আলম মনু, বিশেষ প্রতিনিধি, কুড়িগ্রামঃ
এমপি প্রার্থী আব্দুল হাই মাস্টার এক হাতে হ্যান্ড মাইক এবং অন্য হাতে পোস্টার সমৃদ্ধ প্লেকার্ড নিয়ে
কুড়িগ্রামে ব্যতিক্রমীভাবে ভোট চাইছেন এক সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী। তিনি একহাতে হ্যান্ড মাইক এবং অন্য হাতে পোস্টার সমৃদ্ধ প্লেকার্ড নিয়ে ঘুরছেন অলিগলিতে। রেকর্ডকৃত হ্যান্ড মাইক বাঁজিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন ভোটারদের। তার সাথে সাথে ছুটে চলেছে স্থানীয় মানুষজন। এমপি প্রার্থী আব্দুল হাই মাস্টার এলাকার মানুষের কাছে অতি প্রিয়ভাজন এবং ভালোবাসার মানুষ। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাইকেলে ঘুরে ভোট চাইলেও এবার তিনি ভোট চাইছেন পায়ে হেঁটে। শুধু সাধারণ মানুষের মনযোগ কাড়তে নয় সত্যিকার অর্থে এলাকার উন্নয়নে মহান সংসদে কথা বলার জন্য একটি করে ভোট দাবি করছেন তিনি। তার এই নির্বাচন পদ্ধতি নজর কেড়েছে এলাকার সাধারণ ভোটারদের মধ্যে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-০১ (নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারী) আসন থেকে জাকের পার্টিও প্রার্থী হিসেবে ভোটে অংশ নিয়েছেন সাবেক ভূরুঙ্গামারী উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই মাস্টার। তিনি এলাকার সাধারণ মানুষের উন্নয়নে তিনি প্রথমে ইউপি চেয়ারম্যান এবং পরে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবার স্বপ্ন দেখছেন জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার। নির্বাচনী ময়দানে একজন ব্যতিক্রমধর্মী প্রার্থী হিসেবে তিনি বরাবর নজর কেড়েছেন। এছাড়াও অতি সাধারণ জীবন যাপন করেন তিনি। চেয়ারম্যার নির্বাচিত হওয়ার পর ড্রেন পরিস্কার করা, রাস্তাঘাটে ঝাড়– দিতে দেখা গেছে তিনি। একবার ইউনিয়ন পরিষদ এবং আরেকবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান হওয়ার পরেও তার বাড়ি ঘর সহ জীবনের কোন পরিবর্তন হয়নি। বরং বারবার নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে গিয়ে জমিজমা সব বেঁচে দিয়েছেন। তার বাড়িটিও বন্ধক আত্মীয় স্বজনদের বন্দক রেখে নির্বাচন করছে। এনিয়ে পরিবারের সদস্যদের কোন আপত্তি নেই। তার ইচ্ছে, মানুষের ভালোবাসা পাওয়া ও এলাকার উন্নয়ন।
তার স্ত্রী জানান, তাকে মানুষ খুব ভালোবাসেন। এবার সবাই চাইছে সে এমপি হোক। তার কাছে মানুষ সহজে এসে কথা বলতে পারবে। সে খুব পরিশ্রম করতেছে। প্রচার করতেছে।
এলাকার ভোটাররা জানান, হাই মাস্টারকে সবাই পাগলা মাস্টার বলে ডাকেন। সাধারণ মানুষ একবার ডালেই তিনি সবকিছু ফেলে ছুটে যান তাদের সাহায্য করতে। এবার তিনি হ্যান্ড মাইক নিয়ে পায়ে হেঁটে পুরো এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। তার আশা আল্লাহ পাক তাকে এবার এমপি নির্বাচিত করবেন। আগাম নির্বাচন করতে গিয়ে যেখানে রাত হচ্ছে সেখানেই কারো বাড়িতে খেয়ে রাত্রি যাপন করছেন। সেখান থেকেই পরদিন আবার নির্বাচনী প্রচারে নামছেন। প্রতিবার নির্বাচনে আব্দুল হাই মাস্টার বিজয়ী হলেও ভোট কারচুপির কারণে তিনি হেরে যান। এবারে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু ভোট হলে তিনি জিতবেন বলে এলাকাবাসী বিশ্বাস করেন।
আব্দুল হাই মাস্টার জানান, আমি গত এক বছর ধরে এলাকায় ঘুরছি। আমি ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থাকাকালিন আমার কাছে স্বাছন্দে নারী পুরুষ এমনকি শিশুরাও এসেছিল। আমি যথাসাধ্য সবাইকে সহযোগিতা করেছি। আমি ভুরুঙ্গামারী ও নাগেশ্বরী উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে চষে বেড়াচ্ছি। আমার কাছে কেউ চা খেতেও চায় না, আমিও মানুষকে কষ্ট দিতে চাই না। এবার সুযোগ এসেছে আমি চাই এলাকার মানুষের জন্য কিছু করি। ভোট করতে গিয়ে আমার বাড়িভিটা পর্যন্ত বিক্রি করছি। আমি নির্বাচিত হলে নারীর উন্নয়ন, গ্যাস লাইন সম্প্রসারণ, কলকারখানা স্থাপন, কচাকাটা থানাকে উপজেলায় রুপান্তর করা, যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন, গরীব মানুষের জন্য সুদমুক্ত ঋণ প্রদনি, চরাঞ্চলের মানুষের জন্য নদী শাসন ব্যবস্থাকরণ এবং চরাঞ্চলে গবাদিপশু পালনের মাধ্যমে মাংস ও দুধ রপ্তানী করতে পারবো।
কুড়িগ্রাম-১ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৫৪ হাজার ১৯১জন। পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৭৭ হাজার ৪৩৯জন এবং নারী ভোটার ২ লাখ ৭৬ হাজার ৭৪৯জন। এই আসনে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছে ৩জন।
আপনার মতামত লিখুন :
Leave a Reply
More News Of This Category



